Translate

Saturday, October 14, 2017

কুসংস্কার ও ধর্ম দুই ভাই

 মানুষ গুহায় বাস করে না। কাচা খাবারও খায় না। এখন মানুষ সকেনভ্য সমাজে বাস করে। সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ। মানুষের মধ্যে  গোঁড়ামি থাকবে? একবার কুমিল্লা গিয়েছিলাম এক বিয়ের অনুষ্ঠানে। দেখলাম- নতুন বউকে কোলে করে ঘরে আনছে, আর কোলে নিয়েছেন দুলা ভাই। এটাই তাদের রীতি রেওয়াজ। নইলে অকল্যাণ হইবে। কত রকমের ভুল বিশ্বাস নিয়ে মানুষ জীবন কাটিয়ে দেয়। তাদের ভুল গুলো কেউ ভাঙ্গিয়ে দেয় না। আমাদের এলাকার মসজিদের ইমাম সাহেব বলেছেন- কুসংস্কার ইসলাম সমর্থন করে না। নো নেভার। কুসংস্কার বিশ্বাস করলে ইমান দুর্বল হয়ে যায়। সত্য কথা বলতে, ধর্ম এবং কুসংস্কার মানুষকে বিভ্রান্ত করে দেয়। পুরো জাতিকে পেছনে টেনে নিয়ে যায়। পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কুসংস্কার বিশ্বাস করে মুসলমানরা।

এই আধুনিক, জ্ঞান-বিজ্ঞানের যুগেও কুসংস্কার বিশ্বাসী মানুষের অভাব নেই। বিশ্বে ধার্মিকেরা কুসংস্কার বিশ্বাসে এগিয়ে আছে। এমনকি এদের চিন্তা ভাবনাও মধ্যযুগের মানুষদের মতো। ধার্মিকদের জীবনযাপনে কুসংস্কার ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। ধার্মিকদের কারনে, সেই আদিকাল থেকেই লোকমুখে প্রচলিত মিথ্যা ধারণা, কিছু বানোয়াট গল্পের মিথ্যা রটনা আজও বিদ্যমান আছে। যা রুপকথা কেও হার মানায়। একসময় মৃত স্বামীর সাথে স্ত্রীকে একই চিতায় পুড়িয়ে মারা হতো। মূলত ধর্মীয় গোঁড়ামি, অজ্ঞতা ও অশিক্ষা থেকে সৃষ্টি হয় যাবতীয় কুসংস্কারের। যারা কুসংস্কার বিশ্বাস করে তারা পুরো জাতির জন্য ক্ষতিকর। ধর্ম এবং ধার্মিকেরা পরিবেশ দুষিত করে দেয়। সরকারের উচিৎ বিজ্ঞান শিক্ষার দিকে বেশি নজর দেওয়া। কুসংস্কার ও ধর্মের ভিত্তিতে লোক ঠকানো বন্ধ করতে হবে সরকারকে। কুসংস্কারের নিরুদ্ধে নতুন আইন তৈরি করতে হবে।

জীবনযাপনের জন্য মানুষের দরকার সঠিক শিক্ষা। খেলোয়াড়, রাজনৈতিক নেতা, লেখক, ইমাম, ব্লগারসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকদের মধ্যে কুসংস্কার রয়েছে। বার্ট্রান্ড রাসেলের মতে, কুসংস্কারের মূল উৎস হলো- ধর্ম। জ্যোতিষীরা ভবিষ্যৎ বানী করেছেন, নবীরাও ভবিষ্যৎ বানী করেছেন। জ্ঞানী মানুষের ভাবনায় থাকে, লজিক ও এনালাইটিকেল জ্ঞান। যা দিয়ে তারা বিশ্বকে সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারেন। ধর্ম এবং কুসংস্কার দুই ভাই। ধর্ম যারা প্রতিষ্ঠিত করেছেন, তারা কুসংস্কারের আধার। ধার্মিকেরা মূলত 'সিজোফ্রেনিয়া' রোগী। একথা সত্য যে, ধর্ম সৃষ্টির আগে থেকেই নানান কুসংস্কারের জন্ম হয়। যেমনঃ যারা ভাগ্যে বিশ্বাস করে, তারা মনে করে যা কিছু ঘটছে সবই পূর্ব নির্ধারিত। অজ্ঞতা ও অশিক্ষা থেকে সৃষ্টি হয় যাবতীয় কুসংস্কারের। এখন সমস্ত মাওলানাদের দায়িত্ব তারা প্রতিটা পাড়ায় পাড়ায়, গ্রামে গ্রামে মাহফিল করবে। এবং চিল্লাইয়া কথা বলবে কুসংস্কারের বিরুদ্ধে। কাটা দিয়েই কাটা তুলতে হবে। যুগ যুগ ধরে হুজুরেরা সর্বনাশ করেছে। এখন তাদের দিয়েই সুফল আনতে হবে।

প্রতিটা ধর্মের বানী গুলোর সাথে কুসংস্কার মিশে আছে। শয়তান, ভূত, পিশাচ এবং জ্বীন ধর্মীয় কুসংস্কার। বর্তমান যুগে ধর্মীয় বিশ্বাস অপ্রয়োজনীয়। অলৌকিকতা ধর্ম বিশ্বাসকে শক্তিশালী করে। তাই সব ধর্মে অনেক অলৌকিক ঘটনা আছে। যেমন, মাছের পেটে ঢুকে যাওয়া, লাঠি সাপ হয়ে যাওয়া, অন্ধকে আলো ফিরিয়ে দেওয়া, চাঁদকে দ্বিখন্ডিত করা, বোরাকে করে মহাকাশ ভ্রমন করা, অদৃশ্য হয়ে যাওয়া, মানুষের মাথা কেটে হাতির মাথা লাগিয়ে দেওয়া, ইত্যাদি। ঠাকুরমার ঝুলি এসেছে ধর্মীয় রুপকথা থেকে। ধর্ম ব্যবসায়ীরা সব যুগেই ভালো থাকে। ধর্ম মানুষকে আধুনিক হতে বাঁধা দেয়। তাই নানান রকম ভয় দেখায়। হাশরের ময়দানে বিচার হবে, দাজ্জাল আসিবে। সূর্য থাকবে মাথার এক হাত উপরে- মগজ গলে গলে পড়বে। আরো কত কি! এযুগের মানুষ ধর্মের ধারধারে না। তারা সমানে মন্দ কাজ করে যাচ্ছে। মন্দ কাজ করে নামাজ পড়তে যায়। আবার মন্দ কাজ করে নামাজে দাঁড়ায়। বড় অদ্ভুত এই ধার্মিকরা।

No comments:

Post a Comment