Translate

Monday, February 12, 2024

ভন্ডদের দেশে

বাংলাদেশের মানুষ ধর্মের নাম শুনলেই 'কাঁত' হয়ে যায়। তখন তাদের আর কোনো হুঁশ থাকে না। সাইদী একজন কুখ্যাত রাজাকার। ৭১ এ' তিনি দেশের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। তাঁরা বিচার হয়েছে। তিনি শাস্তি পেয়েছেন। দেশ কলঙ্ক মুক্ত হয়েছে। দেখা গেলো সাইদীর মৃত্যুর পর বহু লোক হায়-হুতাশ করেছে। মন খারাপ করেছে। যারা সাইদীর জন্য মন খারাপ করেছে তাঁরা মূলত বাংলাদেশে থেকেও পাকিস্তানী মানসিকতার লোক। এরা ক্রিমিনাল। এই দেশে থেকে, এই দেশে খেয়ে তাঁরা হৃদয়ে পাকিস্তান ধারন করে। এরা মূলত জাতির শত্রু। সাইদী, গোলাম আযমদের যারা দেশে ফিরিয়ে এনেছে, ক্ষমতায় বসিয়েছে তাঁরা রাজাকারদের চেয়েও খারাপ। মেজর জিয়া ভয়াবহ অন্যায় করেছে। সেই অন্যায় অব্যহত রেখেছে খালেদা জিয়া পর্যন্ত।

স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ বা আইনস্টাইন এসেও যদি বলেন- সাইদী মহান ব্যাক্তি। তার তুলনা হয় না। তাহলে সাইদী একজন ভালো মানুষ হয়ে যাবে না। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কিছুদিন আত্মগোপনে থেকে ভোল পাল্টে ফেলে সাঈদী। ওয়াজ মাহফিলে ইসলামের মাহাত্ম্য বর্ণনা করে দেশে-বিদেশে ভিক্ষা করা তার পেশা। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসই সে ও তার সহযোগীরা গনিমতের মালের জমজমাট ব্যবসা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়। মুদি দোকানি সাইদী স্বাধীনতা যুদ্ধের পর রাতারাতি সে বনে যায় ধর্ম ব্যবসায়ী। শুরু করে ধর্মের নামে ওয়াজের ক্যাসেট বিক্রি। হঠাৎ করেই এই অপরিচিত লোকটি হয়ে ওঠে রাজনীতিবিদ। ধর্ম না থাকলে আমাদের দেশের অনেক লোকের কি যে হতো! ধর্ম করে অনেক লোক বিশাল অর্থের মালিক হয়েছে এবং করেছে অনেক অপকর্ম।

যারা নেশা করে তাদের কাছে নেশার বস্তু অনেক জনপ্রিয়। ধর্ম মূলত আফিম। আফিমে বুঁদ হয়ে যায় দেশের মূর্খ জনগন। অনেক দুষ্টলোক নানান রকম অপরাধ করে। সেই অপরাধ গুলো লুকানোর জন্য শেষমেশ ধর্মে এসে আশ্রয় নেয়। সাইদী ৭১ 'এ জঘন্য অপরাধ করে, শেষে ধর্মের লেবাস পড়ে। এই দেশের মানুষকে বোকা বানিয়েছে। আমাদের দেশের মানুষ অশিক্ষিত হওয়ায় তাঁরা হুজুরদের সমীহ করে। আসলে এই সমস্ত হুজুর গুলো বদমাশ। এক একটা অমানুষ। এরা জাতিকে পেছনে টেনে নিয়ে যায়। আমরা জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারছি না- তার কারণ অতি ধার্মিকতার কারনে। অসৎ টাকায় এতিমখানা মাদ্রাসা করা হয়। অথচ আমাদের দরকার স্কুল। মাদ্রাসা শিক্ষা দিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করা ছাড়া কোনো উপায় নাই। কোরানে হাফেজ দিয়ে জাতির কোনো উপকার হবে না। এরা শেষমেশ জাতির বোঝা হয়ে দাঁড়ায়।

মূলত বাংলাদেশে খাঁটি ধার্মিক নেই। যারা ধর্মকর্ম করছে, ওয়াজ করছে। মূলত তাঁরা ধর্ম ব্যবসায়ী। সাইদী একজন বড় ধর্ম ব্যবসায়ী। আজহারী থেকে শুরু করে আমির হামজা, শায়েখ আহমাদুল্লাহ, তারেক মনোয়ার, মামুনুল হক এরা মূলত ধর্ম ব্যবসায়ী। এরা ওয়াজ করে, মানুষকে বোকা বানিয়ে নিজেরা লাভবান হচ্ছে। সরকারের উচিৎ এদের অফ করে দেওয়া। আমাদের মুসলিম দেশ। দেশের বেশির ভাগ লোক মুসলিম। আমাদের দেশে মসজিদ মাদ্রাসার অভাব নেই। অথচ আমাদের দেশে চোর বাটপার দূর্নীতিবাজের অভাব নেই। দেশের বেশির ভাগ লোকই ইতর শ্রেনীর। আসল সমস্যা হলো আমাদের দেশে সঠিক শিক্ষার অভাব। দেশের বেশির ভাগ মানুষ দরিদ্র। দরিদ্র পিতামাতা তাদের ছেলেমেয়েকে স্কুলে দিতে পারে না। তাঁরা দেয় মাদ্রাসায়। মাদ্রাসার শিক্ষা জাতির ক্ষতি করছে।

জামাতে ইসলাম, হেফাযতে ইসলাম, খেলাফত মজলিশ, এইসব বিচিত্র নামের আড়ালে মুনাফিকদের ভিড় বেড়েই চলেছে। দেশে মসজিদের সংখ্যা ২ লাখ ৫৩ হাজার ১৭৬টি। এর মধ্যে শুধু ঢাকা শহরেই রয়েছে ২ হাজার ৭৭৭টি মসজিদ। অথচ দেশে লাইব্রেরী নেই। আমাদের মসজিদ না আমাদের দরকার লাইব্রেরী। ধর্মীয় জ্ঞান দিয়ে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলা যাবে না। প্রয়োজন আধুনিক শিক্ষা। রাশেদ খান মেনন এবং হাসানুল হক ইনু, তাদের কিন্তু হজ করার কথা না। তারা যখন বুঝতে পেরেছে, এখান থেকে তারা বেনিফিট পাবে। ধর্মের একটা লেবাস লাগালে বিভিন্ন রকমের সুবিধা হতে পারে। তখন সেটা তারা করেছে। দেখলেন ধর্মের কি চমৎকার ব্যবহার। ধার্মিকেরা বুঝে না- 'যে সত্যের আলোয় অবগাহন করে নিজেকে পবিত্র করা যায় এবং সেই আলোই হচ্ছে- 'জ্ঞান'। জ্ঞানের চেয়ে সুন্দর আর কিচ্ছু নেই।

No comments:

Post a Comment